তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া: ঝুঁকিতে সুন্দরবন

সুন্দরবন এলাকায় কয়লা নির্ভর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শীপইয়ার্ড ও একটি সাইলো গুদাম তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। এতে ব্যাপক পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কায় রয়েছে সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনে শীর্ষে থাকা দেশের একমাত্র ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন। এই তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সুন্দরবন তার নিজস্ব সৌন্দর্য হারাবে বলে পরিবেশবিদরা আশঙ্কা করছেন। দেশের পরিবেশ সংগঠন গুলোর দাবি- সুন্দরবন এলাকায় ১৩শ’ ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ভারত থেকে আমদানিকৃত কয়লাভিত্তিক প্রস্তাবিত তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প, চাঁদপাই এর শীপইয়ার্ড ও সাইলো গুদাম স্থাপিত হলে সুন্দরবন তার স্বাভাবিক চরিত্র হারাবে। তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প শুরু হলে এই এলাকায় অসংখ্য কয়লা ডিপো তৈরি হবে, শুরু হবে গাছ কাটা। এতে বনে অগ্নিকাণ্ডও সংগঠিত হতে পারে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আব্দুল মতিন বলেন, কয়লা পোড়ানোর কারণে সুন্দরবনের জৈবিক ও বায়ুম-লীয় পরিবেশ বিঘি্নত হবে। তিনি বলেন, বায়ুম-লের সালফার ডাই অক্সাইড ও কার্বন যৌগসমূহ বনের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এর থেকে এসিড বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প, চাঁদপাইতে শীপইয়ার্ড ও সাইলো গুদাম স্থাপিত হলে এই বনকে বিশ্বের সপ্তমাশ্চার্য নির্বাচনের শীর্ষে ধরে রাখা কঠিন হবে। ইতিমধ্যে বাগেরহাটের রামপাল থানার সাপমারী ও কাটাখালী মৌজার প্রায় ২ হাজার একর কৃষি জমি অধিগ্রহণ করার কাজ চূড়ান্ত করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। যা উদ্বেগের বিষয়।
এ প্রকল্পের বিরুদ্ধে মানবাধিকার সংগঠন সেন্টার ফর হিউম্যান রাইট্স মুভমেন্টের পক্ষে মো. মোজাহেদুল ইসলাম জনস্বার্থে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেছেন। পিটিশনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি এ.এইচ.এম. শামসুদ্দিন চৌধুরী এবং বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন এর আদালত সুন্দরবনে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ওপর স্থিতি অবস্থা জারি করেন। সম্প্রতি সেই আদেশ বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আবেদন করেছে।
সেন্টার ফর হিউম্যান রাইট্স মুভমেন্টের মহাসচিব এম. মোজাহেদুল ইসলাম মুজাহিদ বলেন, বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রাকৃতিক ঐতিহ্য সুন্দরবন আমাদের একার নয়। এটি বিশ্ববাসীর। এই বনকে সংরক্ষণের দায়িত্ব আমাদের।

Leave a comment