বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার পর থেকে তিন মাস হয়েছে। এই পুরো সময়ে মানুষজনকে নানা ধরনের অভ্যাস করতে হয়েছে। তার একটি হল সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবহার। রাস্তায় বের হলেই দেখা যায় চারিদিকে প্রায় সবাই সার্জিক্যাল মাস্ক, পলিথিনের হ্যান্ড গ্লাভস, সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস, ফেস-শিল্ড, সার্জিক্যাল ক্যাপ, পিপিই এগুলো পরে আছেন। সবাই এর সবগুলো না পরলেও অন্তত মাস্ক ও গ্লাভস পরতে দেখা যাচ্ছে। কয়েকটি ছাড়া এসব সামগ্রীর বেশিরভাগই একবার ব্যবহারযোগ্য। এসব সামগ্রী ব্যাবহারের পর কিভাবে ফেলা উচিৎ তার নিয়ম আছে যা মেনে চলার উপরেও করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা নির্ভর করে।
করোনার ঝুঁকি এড়াতে মাস্ক-গ্লাভসের মতো সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করছে মানুষ। ব্যবহার শেষে অনেকে ফেলে দিচ্ছে যেখানে সেখানে। এতে সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়ছেন পথচারী ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীরা। এদিকে করোনা সম্পৃক্ত বর্জ্য মাটি ও পানিতে মিশে জীবাণু খাদ্যচক্রে প্রবেশ করার শঙ্কা জানিয়েছেন একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। একটি গাছ দাঁড়িয়ে, প্রথম দেখায় মনে হবে করোনার থেকে বাঁচতে মাস্ক পরেছে গাছ। আসলে ব্যবহার শেষে মানুষের ফেলে দেয়া মাস্কের বোঝা বইতে হচ্ছে গাছটিকে। রাজধানীর এমন কোনো সড়ক পাওয়া দায়, যেখানে এভাবে পড়ে থাকা মাস্ক কিংবা গ্লাভসের দেখা মিলবে না। পিপিইর মতো সংবেদনশীল সুরক্ষা সামগ্রীও অবহেলায় ফেলে রাখা হয়েছে। এসব সামগ্রীর মাধ্যমে পথচারীরাও করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা।
মেডিসিন ও সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আরিফুল বাশার বলেন, রাস্তার মধ্যে অনেক মাস্ক এবং গ্লাভস পড়ে থাকতে দেখা যায়। এটা স্বাস্থ্যের জন্য মেটেও নিরাপদ নয়। কারণ আমরা জানি ভাইরাসটি খালি জায়গায় ২-৩ দিন বেঁচে থাকে।
এনভায়রমেন্ট অ্যান্ড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অগানাইজেশন এসডো মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, জাম সম্মৃদ্ধ এসব জিনিসগুলো যদি পরিবেশে যায় তাহলে মাটি পানিতেও জীবাণু মিশে যাবে। করোনাসম্পৃক্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সরকারি সংস্থাগুলোকে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে অসহায় স্বীকারোক্তি দিলেন পরিবেশ অধিদফতরের পরিবেশ অধিদফতর পরিচালক জিয়াউল হক। জনগণের সহযোগিতা ছাড়া পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গবেষকরা বলছেন, এভাবে যত্রতত্র ফেলা নিরাপত্তা সামগ্রীর মাধ্যমে মাটি ও পানিতে ছড়াচ্ছে জিবাণু। যা খাদ্যচক্রে প্রবেশ করে ঘটাতে পারে রোগের ভয়াবহ বিস্তার। তাই জনগণকে এসব আবর্জনা যত্রতত্র না ফেলা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নগর প্রশাসনকে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
যত্রতত্র সুরক্ষা সামগ্রী ফেলার ঝুঁকি
বাংলাদেশ হেলথ সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডমলজির শিক্ষক মোসাম্মাত নাদিরা পারভীন।
তিনি বলছেন, “অনেক মাস্ক ও গ্লাভস রাস্তায় পরে থাকতে দেখছি। হয়ত অনেকে ভাবছেন বাড়িতে ঢোকার আগে এগুলো ফেলে দিয়ে যাই। পরিবারের লোকদের কথা ভাবেন। চারপাশে সাধারণ মানুষ যখন এসব সুরক্ষা সামগ্রী প্রতিদিন ব্যবহারের পর ফেলে দিচ্ছেন তারা সেগুলো জীবাণুমুক্ত করেন না। সাধারণ বর্জ্যের মতোই ফেলে দেন। কিন্তু এটা খুবই ভুল হচ্ছে।”
তিনি বলছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাতাসে ছড়াতে পারে তাই ব্যবহৃত সুরক্ষা সামগ্রী সঠিকভাবে ফেলা দরকার।
কাপড়, প্লাস্টিক ইত্যাদি নানা ধরনের সামগ্রীর উপর করোনাভাইরাস বিভিন্ন মেয়াদে বেঁচে থাকতে পারে।
বিশেষ করে প্লাস্টিকে এর স্থায়িত্বকাল ২৪ ঘণ্টা বা তারও বেশি। যদিও এই মেয়াদ নিয়ে গবেষকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এএসএম আলমগীর বলছেন, “গ্লাভস হাতে দিয়ে অনেকে ভাবে আমিতো গ্লাভস পরে আছি। কিন্তু সে হাত দিয়ে যেভাবে সবধরনের জিনিস ধরেন, মুখ স্পর্শ করেন তেমনি গ্লাভস পরা অবস্থাতেও সেটি করছেন। তারপর রাস্তাঘাটে মাস্ক বা গ্লাভস ফেলে দিচ্ছেন। অনেক ব্যক্তির করোনা সংক্রমণ থাকলেও কোন লক্ষণ থাকে না। সুরক্ষা বর্জ্য সঠিকভাবে না ফেলা মানে আমরা নিজেরাই একে অপরের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছি।”
মোসাম্মাত নাদিরা পারভীন আরো উল্লেখ করলেন, পরিবেশের ক্ষতির কথা। সম্প্রতি এনভায়রনমেন্ট এন্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন নামের একটি সংস্থা এক গবেষণার পর বলছে, ঢাকা শহরে ব্যাপকভাবে প্লাস্টিক বর্জ্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
তাদের গবেষণায় দেখা গেছে ২৬ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ প্লাস্টিক বর্জ্য বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪ হাজার ৫০০ টন। যার বেশিরভাগই করোনাভাইরাস সুরক্ষা সামগ্রী।
যেভাবে এসব সুরক্ষা সামগ্রী ফেলতে হবে
এএসএম আলমগীর বলছেন, সাধারণ মানুষ যেভাবে গ্লাভস, মাস্ক বাড়ির অন্যান্য আবর্জনার সাথে ফেলছেন বা রাস্তায় ফেলে দিচ্ছেন সেটা খুবই অবৈজ্ঞানিক। তিনি বলছেন তারা নিজেরা যখন ল্যাবে কাজ করেন কিছুক্ষণ পরপর অ্যালকোহল দিয়ে গ্লাভস পরিষ্কার করেন যাতে কোন ধরনের জীবাণু না থাকে।
তিনি বলছেন, “যেহেতু বোঝার উপায় নেই কোন বাড়িতে কারো করোনাভাইরাস আছে কিনা তাই এসব সামগ্রী জীবাণুমুক্ত করে তারপর ব্যাগে ভরে ব্যাগের মুখ বন্ধ করে তারপর ফেলা উচিৎ।”
বাংলাদেশে প্রচুর মানুষ বর্জ্য থেকে পুনঃব্যবহার জন্য নানা সামগ্রী সংগ্রহ করেন। বর্জ্যের স্তূপ থেকে ব্যবহৃত পিপিই, মাস্ক ও গ্লাভস সংগ্রহ করছেন তারা, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে এমন ছবি ছাপা হয়েছে। বিশেষ করে পিপিই’র প্রতি তাদের বেশি আগ্রহ। মোসাম্মাত নাদিরা পারভীন ফেলে দেয়া সুরক্ষা সামগ্রী পরিষ্কার করে আবার বাজারে বিক্রি করার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে গ্লাভস পরিষ্কার করা সহজ।
তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন, “গ্লাভস জীবাণুমুক্ত করার পর তা উল্টো করে খোলা উচিৎ। এরপর গ্লাভসগুলোকে যদি একটু কাঁচি দিয়ে কেটে দেয়া যায়, মাস্ক একটু আগুনে পুড়িয়ে ফেলা যায় তাহলে তা রিসাইকেল করে বিক্রি করা সম্ভব হবে না। কেউ যদি পিপিই বা সার্জিক্যাল ক্যাপ ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রেও একই কাজ করা উচিৎ।”
এএসএম আলমগীর ব্যবহৃত সুরক্ষাসামগ্রী আলাদা ব্যাগে ভরার কথা বলছেন। এতে করে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা তা আলাদা করে চিহ্নিত করতে পারবে।
তিনি বলছেন, “বাড়িঘরে উৎপাদিত বর্জ্য ফেলতে প্রতিদিন নতুন ময়লার ব্যাগ ব্যবহার করা উচিৎ। বালতিতে রেখে সেটি ময়লার ভ্যানে তুলে না দিয়ে ব্যাগে ভরে, ব্যাগের মুখ গিট দিয়ে তবেই পাড়ার বর্জ্য সংগ্রহকারীকে দেয়া উচিৎ।”
সূত্র : বিবিসি
Thank you! Great stuff!
Thank you too
You actually stated this exceptionally well.
Very good facts. Thank you.
You actually explained that exceptionally well.
You said it very well..
argumentative essay
help writing thesis statement
essay writings
professional essay writing help
Nicely put. Thank you.
college essays
cheap essay writing service
essay writings
admission essay writing
Wonderful article! This is the type of information that are supposed
to be shared around the net. Disgrace on Google for no longer positioning this post higher!
Come on over and talk over with my site . Thanks =)
Excellent post. I was checking constantly this weblog and I’m inspired!
Very useful information specifically the remaining section :
) I take care of such information much. I was seeking this certain information for
a very lengthy time. Thank you and best of luck.
Thank you
This information is worth everyone’s attention. When can I find out more?